বিশ্বের কয়েকটি দেশের পর ভারতে হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস বা এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাবের খবর প্রকাশ হলেও বাংলাদেশে এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে দিনাজপুরের হিলি ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ সীমান্তে কোনো ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা এখনও নেওয়া হয়নি। ফলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই প্রতিদিন এই দুই চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে যাতায়াত করছেন অসংখ্য পাসপোর্টযাত্রী।
প্রতিদিন শত শত পণ্যবাহী ট্রাক এই দুই গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত করছে। ট্রাকগুলোর চালক ও হেলপাররাও এক দেশ থেকে এসে অন্য দেশে অবস্থান করছেন। তবে তাদেরও কোনোপ্রকার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে না।
এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড-১৯ এর মতোই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে এইচএমপিভি ভাইরাস।
জ্বর, কাশি, নাক বন্ধ থাকা, গলা ব্যথা ও হাঁচির মতো সাধারণ ফ্লু-জনিত অসুস্থতার লক্ষণগুলোই এই ভাইরাসের উপসর্গ। তবে আক্রান্ত হওয়ার পর এটি গুরুতর আকার ধারণ করে। শিশু ও যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, এমন বয়স্ক মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।
২০০১ সালে নেদারল্যান্ডসে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে কাম্বোডিয়ায় শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। বিস্তার করতে করতে কিছুদিন আগে ভারতে এই ভাইরাসে দুই শিশু আক্রান্ত হয়েছে।
সম্প্রতি কলকাতায়ও এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর দেখা মিলেছে। এমতাবস্থায় মনে আতঙ্ক নিয়ে ভারত যাওয়া-আসা করছেন পাসপোর্টযাত্রীরা।
ভারতে যাওয়ার পথে হিলি চেকপোস্টে নওগাঁর শ্যামল চন্দ্র বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি করোনার মতোই নতুন একটি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ভারতে কয়েকদিন আগে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মনে আতঙ্ক থাকলেও কী করার, চিকিৎসার জন্য যেতেই হচ্ছে! ডাক্তারের সিরিয়াল নেওয়া আছে। আবার যদি ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয় তাহলে চরম বিপদে পড়ব। তাই বাধ্য হয়ে যাওয়া।’
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি এইচএমপিভি ভাইরাস সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এজন্য আগাম সতর্কতা হিসেবে হিলি চেকপোস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতে চলাচল করা পাসপোর্ট যাত্রীদের মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নির্দেশনা দিলে পরবর্তীতে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন: এইচএমপিভি ভাইরাস: কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা